বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
রাজধানী ঢাকার পূর্বাঞ্চলে শীতলক্ষ্যা আর বালু নদী মোহনার পশ্চিম তীরে শান্ত স্নিগ্ধ এক মনোরম পরিবেশে আমাদের প্রিয় বাওয়ানী স্কুল এন্ড কলেজ অবস্থিত। যার পথ চলা শুরু হয় ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে। স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল ফলাফল করে আসছে। আমি ১৬/১১/২০২১ খ্রিস্টাব্দ তারিখে ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমি দায়িত্ব লাভের পর থেকেই বিদ্যালয়ের কার্যক্রম কে আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করার মানসে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করি। তারই একটি অংশ হিসেবে ওয়েব সাইটের সূচনা।
আমি আশা করি সময়োপযোগী বিজ্ঞান মনস্ক জাতি গঠনের প্রত্যয়দীপ্ত এ সূচনাকে সকলেই স্বাগত জানাবেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মানুষের জীবন ধারনের পদ্ধতিকে বদলে দিয়েছে- জীবনকে করেছে সহজ, সুন্দর ও আনন্দময়। শিক্ষা ক্ষেত্রেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি যোগ করেছে নতুন মাত্রা। এর মাধ্যমে আমাদের বিদ্যালয়ের বিভিন্ন তথ্য ও ছবি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে এবং শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই পরীক্ষার রুটিন, ফলাফল, ভর্তি ফরমসহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যাদি সহজেই পেয়ে যাবে। এ ওয়েব সাইট শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও প্রাক্তনদের মাঝে তৈরী করবে এক নিবিড় বন্ধন। ফলে প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক মানোন্নয়ন ও তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করনে একটি নুতন মাত্রা যুক্ত হবে বলে আমার বিশ্বাস। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করে দেশ ও জাতীর উন্নয়ন সাধন করবে এটাই আমার আন্তরিক প্রত্যাশা।
প্রতিষ্ঠানের আরো উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার জন্য আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা, পৃষ্ঠপোষকতা ও পরামর্শ একান্ত কাম্য। তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগের এ নব যাত্রায় অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও গভর্নিং বডির সকল সদস্যের জন্য রইলো লাল গোলাপ শুভেচ্ছা।
পরিশেষে সকলের সুন্দর ও সুস্বাস্থ্য কামনার পাশাপাশি আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি আল্লাহ আমাদের সকলের প্রতি সহায় হোন। আল্লাহ হাফেজ।
“Education is not Preparation of life, rather it is living”
শিক্ষা শুধু জীবন প্রস্তুতির উপায় নয়, তা জীবন-যাপনের প্রণালীও বটে।
শিক্ষাকে জীবনব্যাপি অনুসরণীয় প্রক্রিয়া হিসেবে দেখতে হবে এবং অভিজ্ঞতাকে শিক্ষা লাভের স্বাভাবিক কৌশল হিসেবে বিবেচনায় রাখতে হবে। আধুনিক শিক্ষা দর্শনে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিসত্তা বিকাশের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ব্যক্তি স্বাতন্ত্রবোধ জাগ্রত করা এবং তাকে আত্মসত্তার আস্থাবান করে তোলাই শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।
এ স্কুলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে সুপরিকল্পিত পাঠ্যক্রম, সহ–পাঠ্যক্রম কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছাত্রদের শারীরিক ও মানসিক গুণাবলীর সর্বোচ্চ উৎকর্ষ সাধন যাতে তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং ভবিষ্যতে দেশ ও জাতিকে উপযুক্ত নেতৃত্ব দিতে পারে। অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে অভিজ্ঞ, প্রশিক্ষিত ও নিবেদিত প্রাণ শিক্ষকমন্ডলী, অত্যাধুনিক পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ল্যাব ও ব্যবহারিক ক্লাস এবং অত্যাধুনিকস্মার্ট ক্লাস রুম। । এ প্রতিষ্ঠানে রয়েছে আধুনিক তথ্য ও বইসমৃদ্ধ লাইব্রেরি; যেখানে পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বই।প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণভাবে রাজনীতিমুক্ত এবং প্রকৃতিগতভাবে সাবলীল একটি আবাসিক প্রতিষ্ঠান।
১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে “ডেমরা বলরাম শ্যামলাল ইনস্টিটিউট নামে অত্র এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে উক্ত বিদ্যালয়টি “ললিতা সুন্দরী বলরাম ইংরেজী স্কুল” নামে রূপান্তরিত হয়। এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের আর্থিক সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি পরিচালিত হতো। তখন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ছিলেন জনাব সফিউল হক প্রধান (নর্থ বেঙ্গল)। ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে বাওয়ানী পরিবারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এহিয়া বাওয়ানী ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় বাওয়ানী উচ্চ বিদ্যালয় নাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করার শুরু থেকেই প্রধান শিক্ষক ছিলেন জনাব মোহাম্মদ তৈয়ব ও সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে ছিলেন জনাব আবদুল মালেক ভ‚ঁইয়া সাহেব। পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন জনাব এহিয়া বাওয়ানী। তখন বিদ্যালয়টির অবকাঠামো ছিলো টিনের দোচালা ঘর। ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে ইহা বিধ্বস্ত হয়। ঐ বছরই বর্তমানে অবস্থানরত পুরাতন ভবনটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। পর্যায়ক্রমে ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার খানে আলম খান সাহেবের অকৃত্রিম সহযোগিতায় ইহা তিন তলা ভবনে উন্নীত হয়। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের অক্লান্ত পরিশ্রম, প্রজ্ঞা, দূরদর্শীতা ও মননশীলতায় প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার পূর্বাঞ্চলের আলোকিত মানুষ গড়ার নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ে উঠেছিল। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ০১/০১/১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে মানবিক বিভাগ, ১৯৬৬ খিস্টাব্দে বিজ্ঞান বিভাগ এবং ১৯৭২ খিস্টাব্দে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ অনুমোদন লাভ করে। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে ইহা এমপিওভুক্ত হয়। এস.এস.সি ভোকেশনাল কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে জেনারেল মেকানিক্স, বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স ও জেনারেল ইলেকট্রনিক্স মোট তিনটি ট্রেড খোলা হয়। পরবর্তীতে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি ও জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস্ ট্রেড খোলা হয়।